ইরান বনাম ইজরায়েলের নতুন দ্বন্দ্বঃ ফিলিস্তিন থেকে পশ্চিমা বিশ্বের দৃষ্টি সরানোর কৌশল?
গতমাসে যখন নেতানিয়াহু পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা দিলো, তখন পশ্চিমের কিছু মিত্র এর বিরোধিতা করলো। কিন্তু এখন তাদের দৃষ্টি কোথায়?
রাজনীতি
১৬ জুন, ২০২৫
নিচে সংযুক্ত ছবির খবরটা গত মাসের (মে, ২০২৫) ১৯ তারিখের। বেশ কয়েকমাস ধরেই ইজরায়েলের বিষয়ে পশ্চিমের অবস্থান একটু একটু করে পরিবর্তন হচ্ছিলো।

গতমাসে যখন নেতানিয়াহু পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা দিলো, তখন পশ্চিমের কিছু মিত্র এর বিরোধিতা করলো। আর সেইসাথে ত্রাণ ঢুকতে না দিয়ে নেতানিয়াহু যে দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছে গাজায়, সেটারও "কড়া" সমালোচনা শুরু হতে লাগলো।
ইউকে, কানাডা, ফ্রান্স "কঠোর পদক্ষেপের" হুমকিও দিয়েছিলো ইজরায়েলকে।
গত ১১ই জুন যুক্তরাজ্য, কানাডা, নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড, এবং অস্ট্রেলিয়া ইজরায়েলের কিছু ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এই জিনিসগুলো কিন্তু নতুন। পশ্চিমারা এতদিন নিঃশর্তে ইজরায়েলের সব কাজেই সমর্থন দিয়ে এসেছে। এখন নিজের দেশের বিক্ষোভকারী জনগণের ক্ষোভ প্রশমনের জন্যই নেওয়া হোক, আর চক্ষুলজ্জ্বাতেই হোক, কয়েকটি পশ্চিমা দেশের এই পদক্ষেপগুলো কিছুটা হলেও পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছিলো।
তারপর ১৩ই জুন ঘটলো, ইজরায়েল ইরান আক্রমণ করলো। ইরানে আক্রমণের পর নেতানিয়াহু কিন্তু আগের কাজ চালিয়েই যেতে লাগলো।
গতকালও (১৪ জুন, ২০২৫) গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া অন্তত ১৫ জনকে গুলি করে মেরেছে তারা। আমরা অনেকেই হয়তো গতকাল ত্রাণ নিতে এসে নিহত হওয়া এক বাবাকে সাইকেলে করে সন্তান বহন করে নিয়ে যাচ্ছে, এমন একটি ভিডিও দেখেছি আরটি এবং আল জাজিরায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইজরায়েল এবং আমেরিকার পরিচালিত এই জিএইচএফ এর ত্রাণ বিতরণ গত মে মাসের ২৬ তারিখে শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭৪ জন ত্রাণ নিতে আসা মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে, আহত হয়েছে ১২০০+!
এই সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে এই পর্যায়ে এসে, অর্ধলক্ষের অধিক মানুষকে মেরে ফেলার পর, সেই বিতর্ক আমার কাছে অর্থহীন মনে হয়।
যাই হোক, বিশ্বের মনোযোগ কিন্তু এখন ইরানের দিকে। গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংক থেকে "ওয়েস্ট" - এর দৃষ্টি অন্তত সরে গেছে। তাই ইরানের সাথে এই নতুন কনফ্লিক্ট ইজরায়েলের দরকার ছিলো নিজের স্বার্থেই।
যদিও এই আক্রমণের পরিকল্পনা নাকি ইজরায়েল গত বছরের শেষের দিক থেকেই করছে, তবে এর চেয়ে ভালো সময় এর আগে ওরা পেয়েছিলো বলে মনে হয় না।